দেশে অনলাইন ক্যাসিনোর সূত্রপাত হয় রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকার তিনটি মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু ওরফে ‘ক্যাসিনো দেলু’র হাত ধরে। সরকারের শুদ্ধি অভিযানের সময় উঠে আসে তার নাম। এরপরেই দেলুর অবৈধ সম্পদের খোঁজে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবশেষে এই ব্যবসায়ীর অবৈধ সম্পদের হদিস পেয়েছে সংস্থাটি।
অবৈধ সম্পদের অভিযোগে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ক্যাসিনো দেলুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী বাদী হয়ে দুদকের আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলাটি করেছেন।
দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবরে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নিজ নামে মোট ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭০ টাকার স্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন আসামি দেলু। কিন্তু সম্পদ যাচাইয়ে তার নিজ নামে ও বেনামে মোট ৯ কোটি ৬৫ লাখ এক হাজার ২২৫ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ যাচাইয়ের সময় তিন কোটি চার লাখ ৭১ হাজার ৩৬৪ টাকার স্থাবর সম্পদ গোপনের তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে নিজ নামে এক কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন দেলোয়ার। অনুসন্ধানে তার নামে-বেনামে মোট ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়।
আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি তার আয়কর নথিতে গৃহ সম্পত্তির আয়, লিমিটেড কোম্পানির বেতন, অন্যান্য উৎসের আয়ের পাশাপাশি লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয় তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন। তবে লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয় বা দায়দেনা ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করতে পারেন না। ব্যক্তি শুধুমাত্র লিমিটেড কোম্পানির সম্মানি গ্রহণ করতে পারেন, যা ব্যক্তির ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করা যায়। অনুসন্ধানে দেলোয়ার হোসেনের নথি পর্যালোচনায় মাত্র ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকার গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ও পারিবারিক ব্যয় হিসাবে ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬৭ টাকা যোগ করলে মোট তার নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ১১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকা। যেখান থেকে গ্রহণযোগ্য ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা আয় বাদ দিলে মোট ১১ কোটি তিন লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। এর জেরেই তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।