ভরা আমন মৌসুমে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সারের দাম বাড়ার সুযোগে সিন্ডিকেট করে কৃত্তিম সংকট তৈরি করছে সার ব্যবসায়ীরা।
চলতি আমন মৌসুমে পর্যাপ্ত সার না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে উপকূলের কৃষকরা। এতে আমন আবাদ ব্যহত হওয়ার শঙ্কা তৈরী হয়েছে।খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, সারের দাম বাড়ার কথা শুনেই মূল ডিলাররা বাজারে সার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। গুদামজাতের কারণেই সারের সংকট দেখা দিয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের কারণে আষাঢ়ে আমন ধানের বীজতলা করতে পারেনি পটুয়াখালীর কৃষকরা। শ্রাবণে এসে বীজতলা করে এখন ক্ষেতে চারা রোপন শুরু করেছে। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট। সার সংকটে খুচরা বিক্রেতাদের কেউ কেউ বন্ধ রেখেছেন দোকান। সারের সংকট থাকায় কৃষকরা টাকা নিয়ে এই দোকান ওই দোকান ঘুরেও চাহিদা মতো সার পাচ্ছেননা। এক দিকে নেই বৃষ্টি, অন্য দিকে সারের সংকট। যার কারণে বিজতলা ও ধানের চারা রোপন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চাষীরা।
বাহেরচর গ্রামের কৃষক শহিদুল বলেন, একদিকে বৃষ্টি নেই ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। পাম্প মেশিন দিয়ে পানি দিতে হয়। কিন্ত ডিজেলের দাম বাড়তি। অন্যদিকে সারের দাম বাড়ার কারনে সারের সংকট দেখা দিয়েছে। কিভাবে ফসলি জমি আবাদ করবো?
ছোট বাইসদিয়া গ্রামের চাষি হারুন মিয়া বলেন, কোন দোকানে গিয়ে সার পাচ্ছিনা। আমাদের ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ডিলারদের দোকানে ঘুরেও সার পাচ্ছিনা। আবার নাকি সারের দামও বাড়ছে।
খুচরা ব্যবসায়ী বশির তালুকদার ও ইকবাল মাহমুদ বলেন, ইউরিয়া সারের দাম ১৬ টাকা থেকে ২২ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে ৬ টাকা বাড়ার কথা শুনেই মূল ডিলারা বাজারে সার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতদিন খুচরা বাজারিরা সার বিক্রি করলেও মূল ডিলারদের গুদামজাতের কারণে এখন বাজারে সার নেই বললেই চলে। তাই আমরা কৃষকদের অল্প অল্প করে সার দিচ্ছি।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, জুলাই মাসের সার ২২ টাকা দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই। তাই গুদামজাত করেও লাভ নেই। এ ব্যপারে তাদের তদরকি অব্যহত রয়েছে। কেউ অসাধুপন্থা অবলম্বন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, কৃষি নির্ভর এই জেলায় চাষাবাদের উপযোগী জমির পরিমাণ ২ লাখ ৩ হাজার হেক্টর। আর এ বছর আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে।