অমতে বিয়ের পাঁচ মাস পর কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
নিজের মতের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ের শিকার হয় কিশোরী সুরাইয়া। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় চলছিল বাবা-মায়ের বকাঝকা। অবশেষে বিয়ের পাঁচ মাস পর পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বাবার বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা গ্রামে ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা। জানা যায়, নিহত কিশোরীর নাম সুরাইয়া আক্তার, বয়স আনুমানিক ১৫-১৬ বছর, গ্রামের মোস্তফা হাওলাদারের মেয়ে।
পাঁচ মাস আগে একই গ্রামের সালেক আকনের ছেলে সোহাগ আকনের (২৮) সাথে সুরাইয়ার বিয়ে হয়। পারিবারিক সিদ্ধান্তের এ বিয়েতে সুরাইয়া রাজি ছিল না। স্থানীয়রা বলছেন, সুরাইয়াকে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করে সোহাগ। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এসব নানা কারণে সোহাগ ও সুরাইয়ার বনিবনা হচ্ছিল না। তাই বাবার বাড়িতেই থাকছিল সুরাইয়া।
স্থানীয়রা আরও জানান, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই সুরাইয়ার সঙ্গে তার বাবা-মায়ের কথা-কাটাকাটি হতো। বৃহস্পতিবারও একই কারণে সুরাইয়ার সঙ্গে তার মা তাসলিমা বেগমের ঝগড়া হয়। এরপর বিকেলে সুরাইয়ার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায় ঘরের ভেতর।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সুরাইয়ার বাবার বাড়ি চরমোন্তাজের চরআন্ডা গ্রাম থেকে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে চরমোন্তাজ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। ওইদিন বিকেল পাঁচটার দিকে সুরাইয়া তাদের বসতঘরের ভেতরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে দাবি তার পরিবারের। নিহত সুরাইয়ার খালা জেসমিন বেগম মুঠোফোনে সাংবাদিক সজ্ঞিব দাসকে বলেন, ‘নাবালিকা মেয়েরে বিয়া দিছে। ছেলের দ্বিতীয় বিয়ে। তাই মেয়ের মত ছিল না। মেয়ে বার বার বলছে আমারে ওই জায়গায় বিয়ে দিলে আমি মরে যাবো। আমরা বোন-দুলাভাইরে অনেক বুঝাইছি। কিন্তু কোন বুঝে কাজ হয় নাই। এখন যদি গলায় ফাঁস দিয়াও মইরা (মরে) থাকে তাওতো তাদের কারণে মরছে।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, নিহত কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত করে বলা যাবে।