প্রাক্তন স্বামী ইমরান শরিফের বিরুদ্ধে আনা জাপানি নারী এরিকোর আদালত অবমাননার আবেদন খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে অবকাশ যাপনের জন্য দুই শিশু জেসমিন ও লাইলা সঙ্গে নিয়ে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে করা আবেদনও খারিজ করেছে আপিল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আপিল বিভাগ বলেছে, এসব বিষয়ে পারিবারিক আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে গত ১৬ মে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এই আদালত অবমাননার আবেদন করেছিলেন জাপানি মা নাকানো এরিকো।
সে সময় আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। তার সহযোগী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে দুই শিশু মায়ের সঙ্গে বারিধারায় থাকবেন। বাবা শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। কিন্তু ইমরান শরীফ নির্দেশনা অমান্য করে জোর করে মাঝে মাঝেই শিশুদের নিয়ে বাইরে যান। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
২০০৮ সালে ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। এরপর টোকিওতে বসবাস শুরু করেন তারা। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। তারা টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে এরিকোর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে ইমরান শরীফ স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করলে এরিকোর সম্মতি না থাকায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
পরে ইমরান দুই কন্যাকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। এরপর এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে সন্তানদের জিম্মার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। এসবের মধ্যেই গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান দুই মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
এ দিকে গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে জেসমিন ও লিনার জিম্মা হস্তান্তরের আদেশ দেন। পরে ছোট মেয়ে সানিয়া হেনাকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন। পরে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।