পটুয়াখালীর গলাচিপায় জয়দেব দাসের তৈরি বাঁশ ও বেতের গৃহস্থলী জিনিসপত্র বিক্রি করে চালাচ্ছেন নিজ সংসার।
উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুহরী গ্রামে বাড়ির সামনে নিবিষ্ট মনে বসে বাঁশ দিয়ে টুকরি (বাঁশের খাঁচা/ঝাঁপি), কূলা, চালন, সাঁজি, চাল মাপার সের, খেলাধুলার টলি, ডালা, মাটি ঝারার চালন তৈরি করছেন জয়দেব দাস নামের ৬৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। জীবিকার প্রয়োজনে তিনি এ পেশায় সংযুক্ত রেখেছেন দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে। বাঁশ ঝাঁপিতে প্রতিদিন নিজের স্বপ্ন বোনেন তিনি। তাঁর তৈরি টুকরি পাইকারেরা কিনে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। তা ছাড়া তিনি নিজেও স্থানীয় বাজারে এগুলো বিক্রি করেন। রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) জয়দেব দাসের বাড়ির সামনে কথা হয় প্রতিবেদকের।
প্রতিবেদককে জানান তাঁর জীবনের কথা। ছোট থেকেই নিজের পরিবারের কয়েক সদস্যকে তিনি বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে দেখেছেন। বংশপরম্পরায় জয়দেব দাস নিজেও এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এখন তো বয়স হয়ে গেছে, তাই প্রতিদিন দুই-তিনটি ঝাঁপি তৈরি করতে পারি।’ এই পেশায় আমার মা রানী, আমার স্ত্রী সন্ধ্যা রানী, আমার বড় মেয়ে সূচিত্রা রানী ও ছোট মেয়ে মুক্তা রানী আমাকে সাহায্য করেন। তাদের সকলকেই আমি এই কাজটি শিখিয়েছি। তিনি আরো জানান, একটি টুকরির দাম মানভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। বাঁশ জোগাড় করতে হয় পাশের গ্রাম থেকে।
নিজের গ্রাম থেকেও মাঝে মাঝে তিনি বাঁশ সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকার বাঁশের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করতে পারেন তিনি। তবে কোনো কোনো দিন বিক্রি এতই কম হয় যে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে যায়। তারপরও বেতের জিনিসপত্র তৈরি করেই তা বাজারজাত করে নিজের সংসার চালোনোর জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার পুঁজি না থাকায় বাঁশ কিনতে বিলম্ব হয়। এতে তার উপার্জনও বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি সহায়তা পেলে আবার তিনি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে জানান।