লালমনিরহাট জেলায় গত কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা কয়েক গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। গোটা জেলা জুড়ে জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত।
সন্ধ্যা হলেই তীব্র শীতে ও হিমেল হাওয়ায় শহর ও গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় প্রচন্ড শীত থেকে রক্ষা পেতে সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত মার্কেটগুলোতে গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে হরেক রকম বাহারী পোশাক সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। শুরুতেই শীত বস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় বিভিন্ন ধরনের শীতের পোশাক তুলেছেন বিক্রেতারা।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও রাস্তার পাশের এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। বিশেষ করে মৌসুম ভিত্তিক দোকান গুলোতে শীতের কাপড় কেনা-বেচা চলছে বেশিদামে।
ফুটপাতের দোকানে একটি সোয়াটারের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা, বাচ্চাদের কাপড় ৫০ থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত, মাফলার ৪০ থেকে ২০০ টকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। স্বাদ্ধের মধ্যে থেকেই পছন্দের শীতের পোশাকটি বেছে নিতে চেষ্টা করছে নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষগুলো।
প্রতিবছর শীত মৌসুম আসলেই ফুটপাতের দোকানগুলোতে এসব গরম কাপড় বিক্রয়ের ধুম পড়ে যায়, তাই এসময় বিক্রেতাদের অবস্থা বেশ ভালোই হয়। গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা থাকায় শীতার্ত মানুষ প্রচন্ড শীত থেকে রক্ষা পেতে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভীড় জমাচ্ছেন বড় শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রান কেন্দ্র মিশনমোড়ের ফুটপাতের দোকানদার আশরাফুল ইসলাম জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছি। শীত বেশি পড়লে ব্যবসা অনেক ভালো হয় এবং শীত কম হলে বেচা কেনা কম হয়। বড়দের জ্যাকেট, সোয়েটার, কোট, বাচ্চাদের কাপড়সহ সব ধরনের গরম কাপড় পাওয়া যায়। আর এই গুলোর দামও তুলনামূলক একটু কম হয়। কোনো পোশাকের মূল্য নির্দিষ্ট করা থাকে না।
তবে দর কষাকষি ছাড়া পছন্দের পোশাক ক্রেতাদের কেনা সম্ভব হয় না। সব পোশাকের দাম একটু বেশি করে চাওয়া হয়। যাতে বিক্রেতারা তাদের লাভ পুষিয়ে নিতে পারেন।
জেলার অন্যান্য ফুটপাতের আরো কয়েকজন শীতবস্ত্র বিক্রেতা জানায়, সব বয়সী মানুষের পোশাক বিক্রয় হচ্ছে ফুটপাতের দোকান গুলোতে। গার্মেন্টস আইটেমের চেয়ে পুরাতন শীতবস্ত্র বিক্রি করে বেশি লাভ হয়। ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে আমাদের লাভ-লোকসান।
কেননা আমরা এক একটি কাপড়ের গাইট কিনি ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়, সেই বিদেশি গাইট গুলো থেকে কখনো ভালো কাপড় বেরহয় কখনো আবার খারাপ বের হয়।
শীতের পোশাক কিনতে আসা আলেয়া বেওয়া নামে এক মধ্য বয়সী নারী বলেন, শীত আসলে কেনা কাটার ধুম বেড়ে যায়। শীত এলেই প্রতিনিয়ত শীতের পোশাক ক্রয় করার চেষ্টা করি, তারপরেও অনেক কিনতে ইচ্ছে করে।
বিশেষ করে শিশুদের দিকটা আলাদা। তাদের জন্য দেখে-শুনে ভালো শীতের পোশাক ক্রয় করি, ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতের অনেক ভালো পোশাক পাওয়া য়ায়। দামের দিক দিয়েও মোটামুটি কম। তবে দর দাম করেই পোশাক কিনছি।
শীতের পোশাক কিনতে আসা লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের দিনমুজুর মশিউর রহমান জানায়, আমি গরিব এবং একজন খেটে খাওয়া মানুষ, আমার বেশি দামী গরম কাপড় কেনার টাকা বা সামর্থ্য কোনটাই নেই। তাই শহরে এসেছি পরিবারের ও নিজের কিছু ঠান্ডার পোশাক কিনতে। যদি সাদ্ধের মধ্যে হয় তবেই কিনবো।নতুবা না কিনেই চলে যেতে হবে।