পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি চালের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ‘ফেয়ার প্রাইস কার্ড’ নবায়নের নামে কার্ডপ্রতি পাঁচশ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আফছারউদ্দিন এ অর্থ আদায় করছেন। এর সঙ্গে ফেয়ার প্রাইসের ডিলার জড়িত আছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মেম্বার আফসারউদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্ড হোল্ডারদের অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কার্ড হোল্ডাররা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গোলখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালিরচর গ্রামে ৩৫৪ জনের নামে ফেয়ার প্রাইস কার্ড রয়েছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক কার্ড হোল্ডারকে বছরে পাঁচ মাস ৩০ কেজি হারে চাল দেওয়া হয়। প্রতি কেজির দাম ১০ টাকা। চলতি মাসে চাল দেওয়ার সময় ইউপি মেম্বার আফসারউদ্দিন কার্ড হোল্ডারদের জানান, প্রত্যেকের কার্ড নবায়ন করতে হবে। এজন্য তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ আদায় শুরু করেন।
কালিরচর গ্রামের ১৫২৬ নম্বর কার্ডধারী জলিল মোল্লা অভিযোগ করেন, তার পরিবারের দুটি কার্ড নবায়নের নামে ইউপি মেম্বার এক হাজার টাকা নিয়েছেন। কার্ডধারী হেলাল মোল্লা জানান, তার কাছ থেকে পাঁচশ টাকা নেওয়া হয়েছে। বিধবা হেমেলা বেগম অভিযোগ করেন, তাকে নতুন কার্ড দেওয়ার কথা বলে ইউপি মেম্বার এক হাজার টাকা নিয়েছেন।
কিন্তু কার্ড দেননি। এ ধরনের বেশ কয়েকজন অভিযোগকারী শুক্রবার চাল বিতরণের সময় জুলেখার বাজারে হাতে কার্ড নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। এ বিষয়ে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে ডিলার নজরুল ইসলাম সাকুর বলেন, আমার অজ্ঞাতে ইউপি মেম্বার টাকা আদায় করেছেন।
আমি আপত্তি করলে কয়েকজনের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে অধিকাংশই এখনো টাকা ফেরত পাননি। উলটো অভিযোগকারীদের কার্ড বাতিলের হুমকি দিয়েছেন। মেম্বার আফছারউদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো টাকা লেনদেন করিনি।
ডিলার ইউপি নির্বাচনে আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে নিজস্ব লোকজন দিয়ে এমন অভিযোগ করেছেন।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, মেম্বারের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।