পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে কোটখালী বাজার। গলাচিপায় সিলভারের হাঁড়ি-পাতিলসহ নানা সামগ্রী এখন তৈরি হচ্ছে।
গলাচিপা উপজেলা ও জেলায় সিলভার সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছে এ পেশায় জড়িত শ্রমিকরা।
সরকারি সহযোগিতা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে এই শিল্প জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গলাচিপা উপজেলার কোটখালী বাজার এলাকার জুলাইবিব মেটাল সিলভার ফ্যাক্টরির মালিক মো. গোলাম আজম বলেন, মেশিন চালু করার পর সিলভারের আকার অনুযায়ী ডাই সার্কেল লাগানো হয়। আকৃতি ঠিক করে ফিনিশং করা হয়।
পরে মোটা রড বগলে চেপে কখনো সোজা করে আবার কখনো শরীর বাঁকা করে সজোরে ঠেলা দিয়ে তৈরি করা হয় সিলভারের হাঁড়ি পাতিল।
তিনি আরও বলেন, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল তৈরির প্রধান কাঁচামাল সিড ঢাকা থেকে আনা হয়। পরে আকার অনুসারে কেটে নানা সামগ্রী তৈরি করা হয়।
প্রতিটি বড় পাতিল তৈরিতে ৪ মিনিট, মাঝারি সাইজের ২ মিনিট এবং ছোট সাইজের পাতিলে ১ মিনিট সময় লাগে। এ ছাড়া কড়াই তৈরিতে ১ মিনিট, ঢাকনা তৈরিতে ৫ মিনিট, কলস তৈরিতে ৫ মিনিট সময় লাগে।
একই কারখানার শ্রমিক সুজিত বলেন, আমাদের কারখানায় তৈরি করা সিলভারের নানা সামগ্রী জেলার গলাচিপা,দশমিনা, বাউফল, রাঙ্গাবালি বিক্রি হয়। এ সকল এলাকায় প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমরা গ্রাহকের চাহিদা মতো মালামাল দিতে পারি না। উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ কারখানায় মাসিক বেতনে চাকরি করছি। তিনটি মেশিনে ৫ জন কাজ করি। মেশিন বাড়লে উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। একই কাখানার শ্রমিক মো. কামাল বলেন, সিলভারের হাঁড়িপাতিল তৈরির পর দাগ তোলার জন্য আ্যসিডের পানিতে তা ধুতে হয়।
পানিতে ধোঁয়ার কারণে মালামাল থেকে দাগ চলে যায়। পরে তা রোদে শুকানো হয়। এরপর পাইকারদের মাধ্যমে তা খুচরা বিক্রেতার কাছে চলে যায়। তারপর খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে সরাসরি ক্রেতার কাছে পৌঁছে যায় আমাদের এ পণ্য।
গলাচিপা পৌরসভার ব্যবসায়ি ওয়ালিদ ট্রের্ডাস এর মালিক মো. মেহেদী হাসান সিজার বলেন, আমাদের দোকানে সিলভারের মালামালের অনেক চাহিদা রয়েছে। আমি সিলভারের হাঁড়িপাতিলের যে পরিমান অর্ডার দেই সে পরিমান মাল তারা আমাকে দিতে পারেনা। প্রতি কেজি ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করি।গলাচিপা উপজেলার কোটখালী বাজারের বাসিন্দা গোলাম মাহমুদ স্বপন বলেন, সিলভারের ফ্যাক্টরি শুরুর পর থেকে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ কুমার বলেন, সরকার সব জায়গায় সহযোগিতা করে থাকে বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায় শিল্পের ক্ষেত্রে।
তারা যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের কোন সুযোগ থাকে তাহলে আমরা সেটা করে দেব।