সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারে বিকাশে দোকান শুরু করার পূর্বে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিল ২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। বিকাশ অফিসে বার বার ঘুরে তথ্য তুলার জন্য আবেদন করেও মিলছে না।
প্রশাসনের লোকের কাছেও দেয়নি তারা। তাহলে কি বিকাশের লোক প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত এমন প্রশ্ন করছেন প্রতারিত বিকাশের দোকানের মালিক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মো. তোয়াহিদ মিয়ার ছেলে মো.সুলেমান মিয়া ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকি শুরু করতে যাচ্ছিলেন।
এজেন্ট ব্যাংকের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং সেবার জন্য বিকাশ এজেন্ট সিম নিয়েছিলেন। শুরু করার আগেই বিকাশ সিম নিয়ে অল্প অল্প লেনদেন করেন। সোমবার (১৫ জুলাই) প্রায় সাড়ে ৪টার দিকে একটি অপরিচিত ০১৮১৭-৯৩৭৩১৬ এই নাম্বারে ফোন দিয়ে বলে যে সে বিকাশ অফিস থেকে ফোন দিয়েছে।
তার দোকানে তথ্য সংগ্রহ করবে। পরে ০১৭৫৪৯৩০০৫৩ এই বিটিবি নাম্বার দিয়ে ফোন দেয়। একটু পরে এজেন্ট নাম্বারে ভেরিফাই কোড পাঠিয়েছে বলে। এটা টাইপ করতে বললে দোকানদার তাদের কথা মত কোড টাইপ করে। পরে এজেন্ট নাম্বারে টাকা লোড করতে বলে তাদের কথামতে একে একে এজেন্ট নাম্বারে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা লোড করে। পরে দোকানদারের বাড়ীতে থাকা আরো তিনটি পারসোনাল নাম্বারে টাকা দিতে বলে তাদের কথা মত এই তিনটি পারসোনাল নাম্বারে টাকা লোড করে। একটু পরে দেখতে পায় কোন নাম্বারে টাকা নাই।
সাথে এজেন্ট নাম্বার সহ পরিবারের ৩টি নাম্বারের সব বিকাশের পিন পরিবর্তন করে দিছে। সাথে সাথে বাজারে থাকা অন্য বিকাশ এজন্টের কাছে আসলে হাউজের সাথে যোগাযোগ করলে তারা হেল্প লাইনে যোগাযোগ করতে বলে। ঘটনার ঘটার কয়েক মিনিটের মধ্যে হেল্প নাইনে যোগাযোগ করে ২দিন সময় নিয়ে তারা কিছু করতে পারে নাই।
পরে সুনামগঞ্জ র্যাব ৩এ একটি অভিযোগ দিলে তারা প্রায় ২দিন চেষ্টা করে ৪টি নাম্বার সংগ্রহ করে যে যে নাম্বারে টাকা গিয়েছে সে নাম্বারের তথ্য দেন। তারা পরামর্শন দেন জগন্নাথপুর থানায় অভিযোগ দিতে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর কাজ শুরু করতে প্রয়োজন হয় ঘটনা ঘটার দিনের এজেন্ট সিমের তথ্য।
এই দিনের তথ্য বার বার ফোন করে তথ্য না পেয়ে মামলার দায়িত্বে থাকা জগন্নাথপুর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক বিকাশের জগন্নাথপুর অফিসে গেলে অফিসে লোক তাদের বসের নাম্বারদেন সেখানে যোগাযোগ করলে তিনি জানান কোর্ট থেকে অর্ডার নিয়ে আসতে হবে নতুবা তারা তথ্য দিবেন না।
এ ব্যাপারে বিকাশ এজেন্ট এর মালিক সুলেমান মিয়া বলেন, আমি নতুন বিকাশ এজেন্ট নিয়েছি। শুরু করতে না করতে বড় ধাক্কা খেয়েছি। আমার মোবাইল ফোনে আমাদের মার্কেটের বিটিবি নাম্বারে ফোন আসায় বিশ্বাস করে তাদের কথা মত কাজ করি। পরে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সাহায্য পেলেও আমার বিকাশ হাউজের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাই নাই। যে দিন ঘটনা ঘটেছিল সে দিনের তথ্য এখনো পর্যন্ত দেয় নাই।
আমি সিলেট কাষ্টমার কেয়ারে গিয়েও তথ্য পাই নাই। আমি বার বার আমাদের এজেন্ট হাউজের লোকদের বলে তথ্য না পেয়ে, থানায় অভিযোগ দিয়েও পাই নাই। আমি জেনেছি আমার সাথে আসা কয়েকটি নতুন এজেন্টকে এভাবে ফোন দেওয়া হয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের সিম যে নতুন এজেন্ট নাম্বার হয়েছে এটা প্রতারক চক্র কিভাবে বুজলো। শুধু নতুন এজেন্টদের ফোন দেয় এটা আমাদের চিন্তা করতে হবে।
তাহলে কি বিকাশের লোক প্রতারক চক্রের জড়িত? এ বিষয়ে তথ্য নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইন শৃঙখলা বাহিনির প্রতি অনুরোধ রইল। এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, আমাদের থানায় অভিযোগ আসার পর মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব আমার কাছে আসে।
প্রথমে আমি ঘটনা ঘটার দিনের তথ্য কালেকশন করতে যাই কিন্তু বিকাশের অফিসে গিয়ে তথ্য না পেয়ে পরে ফোন তাদের লোকদের সাথে আলাপ করলে তারা জানায় কোট থেকে অর্ডার নিয়ে আসতে হবে নতুবা তারা তথ্য দিবে না।
এ ব্যাপারে জানতে টেরিটরি ম্যানেজার সজিব সাহার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিকাশে তথ্য নিতে চাইলে থানার মধ্যে দুটি নাম্বার দেওয়া আছে এ নাম্বারে যোগাযোগ করলে অফিস তথ্য দিয়ে দিবে। যদি তারা বলে কোর্ট থেকে অর্ডার নিয়ে আসতে হবে, তাহলে আগামী কাল বসের সাথে আলাপ করে এ বিষয়ে জানাবো।
এ ব্যাপারে জানতে বিকাশ হেড অফিসের তাসকির রহমানে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলা বিষয় হলে কোর্টের আদেশ লাগে। কোর্ট বিকাশকে আদেশ করবে তথ্যটা দেওয়া জন্য এটা অফিসিয়ার করার জন্য মামলার আদেশ করা লাগে।