ইভ্যালির বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের অনুসন্ধান চলাকালে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল দেশ ত্যাগ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে দুদক।
দুদক জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা চালাচ্ছেন। দুদক মনে করছে, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দুই সদস্যের টিম কাজ করছে। টিমের অপর সদস্য হলেন- উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম। পুরোনো বেশ কয়েকটি অভিযোগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে শুরু হয়েছে দুদকের অনুসন্ধান।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল শুক্রবার বলেন, বিদেশে যাওয়ার আগেও কোনো ইচ্ছা ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। এই সময়ে কোনো দেশের ভিসাও নেওয়া নেই। দুদকের এই পদক্ষেপে বরং ভালো হলো।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত বছরের নভেম্বরে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসাবে ইভ্যালির নেওয়া প্রায় ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না- সর্বশেষ গত ৪ জুলাই আসা এমন অভিযোগসহ বিভিন্ন অনিয়ম খতিয়ে দেখতে দুদকসহ সরকারের চার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ইভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ মার্চে ইভ্যালির মোট সম্পদ ৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৬ টাকা ( চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকা) এবং মোট দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৪ টাকা।
ওই তারিখে গ্রাহকের কাছে ইভ্যালির দায় ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টের কাছে দায় ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকা। গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টদের কাছ থেকে ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকার মালামাল নেওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ ১ হাজার ৯১৪ টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকা। যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তার চলতি দায়ের বিপরীতে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।