নোয়াখালীর সুবর্ণচরে পূর্ব শত্রুতা ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জের ধরে এক ওমান প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
নিহত ওমান প্রবাসী মো.কামাল উদ্দিন (৩৩) উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেস গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে এবং ২ সন্তানের জনক ছিল।
বুধবার (৯জুন) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেস গ্রামের মালেকের চা দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পরে গুরুত্বর আহত কামালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে একই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই বেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, তার ভাই ওমান প্রবাসী কামাল গত ২ মাস ৯ দিন আগে দেশে আসে। সে গত ১০ বছর যাবত ওমান প্রবাসী ছিল। আগামী (২১ জুন) উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনে নিহত কামাল চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী মো.জয়নাল আবেদীনের পক্ষে ভ্যানগাড়ী মার্কায় এলাকায় ভোট চায়। এতে সে অপর তিন ইউপি সদস্য প্রার্থীদের রোষানলে পড়ে। ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী আব্দুর রহীমের ভাই কবির পুলিশে চাকরি করে। সে তার ভাইয়ের মদদে, প্রভাবে এলাকায় অনিয়ম করে।
গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় কাজী নূরনবী দরবেশের বাজারে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী আব্দুর রহীম ও তার সমর্থকরা কামালকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। এই নির্বাচন নিয়ে এর আগে কামালের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের একটি মামলায় নিহত কামাল ২৪ দিন কারাগারে ছিল। গত কিছু দিন আগে সে জামিনে মুক্তি পায়। ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী আব্দুর রহীম, সেলিম মেম্বার, মাসুদের নির্দেশে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার (৯ জুন) দুপুরে উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চরকাজী মোখলেস গ্রামের মালেকের দোকানে বসে কামাল উদ্দিন চা খাচ্ছিল। ওই সময় একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী মৃত সফি মিয়ার ছেলে মো. মাইন উদ্দিন ,মো.রফিক, মো.ইসমাইল, আব্দুর রহীম, জসিম, ছায়েদুল হক সাদুর ছেলে জসিম উদ্দিন তুষার, আহসান উল্লাহ, রুহুল আমিনের পুত্র আবুল কালাম, সেলিমের পুত্র মাসুদের নেতৃত্বে কামালের ওপর অতর্কিত হামলা করে।
এ সময় হামলাকারীরা কামাল উদ্দিনের মাথায় উপর্যুপরি রামদা দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন সন্ত্রাসীরা মালেকের একটি পা কুপিয়ে গুরুত্বর ভাবে জখম করে। এ সময় চিহ্নিত সন্ত্রাসী রফিক একটি স্ক্রু দিয়ে রফিকের চোখে প্রচণ্ড আঘাত করে।
এ সময় স্থানীয় বাসন্দিা কালু মিয়া প্রতিবাদ করলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। পরে কামালের আত্মীয় স্বজন খবর পেয়ে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা কামালের একটি মোটর সাইকেলকেও ভাঙচুর করে তারা। পরে আহত কামালকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে তার মৃত্যু হয়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তাৎক্ষণিক এ ঘটনায় ইসমাইল ও আবুল কালাম নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশ।