গাড়ি অভারটেক করার সময় দুই বাসের সংঘর্ষে একটি গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে যায়। আর সামান্য এই লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে ফেলায় গাড়ির চালককে পিটিয়ে হত্যা করেছে অপর গাড়ি চালক।
চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুরে। বাসের পাশ কাটাতে গিয়ে কাভার্ডভ্যানের লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে যায়।
নিহত মো. শাহজাহান (৩৬), গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বরুণ এলাকার মো. আব্দুস সালামের ছেলে।
তিনি শ্রীপুরের বরমী এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় আমান গ্রুপের শ্রমিক আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত বাস চালাতেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় রাতেই নিউ যমুনা ট্রান্সপোর্ট এন্ড পার্সেলের চালক টিটু (২২) এবং নিউ গাজীপুর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সীর সেলসম্যান মো. রফিকুল ইসলামের (২৭) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহজাহান ওই কারখানার অপর স্টাফ বাসের চালক মো. কামালের বাসে তার পেছনের সিটে বসে স্থানীয় গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি হাজী ফিলিং স্টেশনে গ্যাস ভরতে যান। পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি ব্যাসস্ট্যান্ডের অদূরে পৌঁছালে তাদের গাড়ি জ্যামে পড়ে। এ সময় ভ্যান চালক ওই বাসের বামপাশ দিয়ে কামালদের বাসের সামনের অংশ লাগিয়ে দেয়। এতে কভার্ডভ্যানের ডান পাশের লুকিং গ্লাসটি ভেঙ্গে যায়। এনিয়ে ভ্যান চালক টিটু ও তার সঙ্গী রফিকুল বাসের চালক কামাল ও শাহজহানের সঙ্গে কথা কাটকাটি হয়।
এক পর্যায়ে কাভার্ডভ্যান চালক ও তার সহযোগী রাস্তার পাশের আইল্যান্ডে দাঁড়িয়ে বাস চালক কামালের পেছনের সিটে বসে থাকা শাহজাহানকে পাশের জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ভেতর থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নামিয়ে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পারপিট করে। এক পর্যায়ে শাহজাহান অজ্ঞান হয়ে পড়লে ভ্যান চালক তার সহযোগীকে নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় কামাল মোবাইল ফোনে ঘটনাটি পুলিশ ও আমাকে অবগত করে এবং আহত শাহজাহানকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহজাহান মারা যায়। রাত ৮টার দিকে পুলিশ শাহজাহানের লাশের সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এমএ সাইদ জানান, বিকেল তিনটার দিকে শাহজাহান নামের একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার গায়ে মারধরের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, পুলিশ ভ্যানসহ সেলসম্যান রফিকুল ইসলামকে আটক করতে পারলেও চালক টিটু পলাতক। বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের বাবা আব্দুস সালাম বাদি হয়ে কাভার্ডভ্যানের চালক মো. রফিকুল ইসলাম (২৭) ও তার সহযোগী টিটুর (২২) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। টিটুকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।