ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের পূর্ব নড়াইল গ্রামে এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকায় রফাদফা করেন স্থানীয় কয়েকজন মাতবর। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে প্রথমে সাংবাদিকদের জানান। এরপর সাংবাদিকদের মাধ্যমে থানা পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়।
এ ঘটনায় (২ ডিসেম্বর) বুধবার রাতে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী নারী অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন। এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পূর্ব নড়াইল গ্রামের মৃত কুদরত আলীর প্রতিবন্ধী মেয়ে রুপালীকে (২০) একই গ্রামের আবেদ মরলের ছেলে বাবুল (৩৫) দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে আসছিল।ধর্ষিতার ভাবি নাজমা বলেন, গত পরশু (সোমবার) রাতে রান্নাঘরে প্রতিবন্ধী রুপালী ও বাবুল হোসেনকে আমি দেখতে পাই।
আমাকে দেখে বাবুল দৌড়ে পালিয়ে যায়।এ বিষয়ে মেয়ের মা ফুলবানু বলেন, আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাবুল দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। বিষয়টি আমরা টের পাইনি। একপর্যায়ে মেয়ের আচরণ অস্বাভাবিক দেখে, পরীক্ষা করার পর মেয়ের গর্ভে চার মাসের বাচ্চা আছে বলে নিশ্চিত হয়েছি।
মেয়ের বাচ্চা নষ্ট করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গত ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে সালিসে বসেন আব্দুল বাকের (বারি ডাক্তার), মতি, জমশের, আকিকুলসহ বেশ কয়েকজন। সালিসে বাচ্চা নষ্ট করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা আব্দুল বাকেরের (বারি ডাক্তার) কাছে দেয় বাবুলের ভাই। বিষয়টি আমি মেনে নিইনি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় সালিসে বসা আব্দুল বারেক (বারি ডাক্তার) বলেন, আমরা বসেছিলাম। কিন্তু বাবুলের বড় ভাই ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি শেষ করতে চেয়েছিল। আমরা তা মেনে নিইনি। আজকেও বিষয়টি নিয়ে বসার কথা ছিল। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো টাকা জমা নিইনি।বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত বাবুল ও স্থানীয় সালিসে বসা বাকি বিচারকদের বাড়িতে গিয়ে ও মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ধর্ষিতা অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আসামিকে ধরতে ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।