পিতৃমাতৃহীন বা পিতৃহীন এতিম শিশুদের ভরণপোষণ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং উপযুক্ত মর্যাদায় সমাজে পুনর্বাসনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে সরকারি শিশু পরিবার পরিচালনা করছে সরকার।
তবে পিরোজপুর সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) দেখা দিয়েছে চরম আবাসন সংকট ও লোকবল সংকট।
এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ২বছর ধরে মূল ভবন না থাকায় ছোট ২টি ঝরাজীর্ণ ভবনে শিশু ও ষ্টাফদের মিলেমিশে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে আর শিশুদের দেখাশোনার জন্য ১৯জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও শূণ্য রয়েছে ১১টি পদ।
এতে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছে, খুব দ্রুত সকল সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সরকারি শিশু পরিবার। বাবার স্নেহ আর মায়ের ভালোবাসা ছোট বেলা থেকেই ভাগ্যে নেই এমন বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই বেড়ে উঠতে হয় শিশু পরিবারের সকল শিশুকে। এই প্রতিষ্ঠানে ঠাই হয় বাবা-মা নেই বা মা আছে বাবা নেই এমন শিশুদের।
অভিভাবকবঞ্চিত এসকল শিশুদের ভরণপোষণ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং উপযুক্ত মর্যাদায় সমাজে পুনর্বাসনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে সরকারি শিশু পরিবার পরিচালনা করছে সরকার। তবে পিরোজপুর সরকারি শিশু পরিবারে(বালিকা) দেখা দিয়েছে চরম আবাসন সংকট।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর তথ্যসূত্রে জানা যায়,পিরোজপুরে ১৯৭৩ সালে শিশু পরিবারটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে সদনের মূল আবাসিক ভবনটি ঝূকিঁপূর্ণ ঘোষণা করে গণপূর্ত অধিদপ্তর । ঝূকিঁপূর্ণ ঘোষণার এক বছর পর ২০১৯ সালে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।
এরপর থেকেই দেখা দেয় চরম আবাসন সংকট। ফলে শিশু ও স্টাফরা ভাগাভাগি করে বসবাস করেন ছোট দোতলা ২টি ঝরাজীর্ণ ভাঙা ভবনে। শিশু শিক্ষার্থীদের দাবি,বসবাস করার মত একটি বাসস্থান ও সুন্দর পরিবেশের।
সদনের ছাত্রী সাদিয়া আক্তার ও নুসরাত জাহান জানান, আমরা এখানে ঠিকমতো খাবার, খেলাধুলা ও পড়াশোনা করতে পারলেও আমাদের থাকার জায়গা নিয়ে আছে নানা সমস্যা। আমরা যে ভবনে থাকি সেটা ভাঙা, সেখান থেকে জল পরে।
আমাদের কষ্ট করে এক কক্ষে ৪ জন থাকতে হয়। শিশু পরিবারে আমরা বাইরের থেকে ভালো থাকি। নতুন ভবনটি হলে আমরা আবাসন সমস্যাটি থেকে মুক্তি পাবো।
শুধু আবাসন সমস্যাই নয় লোকবলেও রয়েছে সংকট। ১০০শিশুদের দেখাশোনার জন্য ১৯জন কর্মকর্তা কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও সেখানে ১১টি পদই শুন্য। মাত্র ৮জন দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক শাবানা খানম জানান,২টি বিষয়ে সংকট থাকলেও শিশুদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ বাকি সুবিধাগুলো পাচ্ছে শিশুরা।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে. এম. আখতারুজ্জামান বলেন, আবাসন ও জনবল সংকটের কথা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিশু পরিবারের নতুন ভবনের কাজ খুব শিঘ্রই শুরু হবার কথা রয়েছে।
পিরোজপুর সরকারী শিশু পরিবারে প্রতিটি শিশুর জন্য প্রতি মাসে খাদ্য জ্বালানী ও দুধ বাবদ ২ হাজার ৫০০ টাকা, শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ও খেলাধুলা বাবদ ৩৫০টাকা, প্রশিক্ষণ বাবদ ১০০ টাকা, সাধারণ পোশাক পরিচ্ছদ ৩০০টাকাসহ মোট ৩ হাজার ৫০০টাকা খরচ বরাদ্দ থাকে। এখানে একশো শিশুর আসন সংখ্যা থাকলেও আবাসন সংকট থাকায় বর্তমানে থাকার জায়গা পেয়েছে ৭০জন।