ঠাকুরগাঁওয়ে পূর্ব পরিচয়ের সুত্র ধরে দুই কিশোরীকে মুঠোফোনে ডেকে এনে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পীরগঞ্জের সেনুয়া বানিয়া পাড়ার মো: আলতাফুর রহমানের ছেলে নয়ন ইসলাম (২২), ভোমরাদহ চিলাছাপা এলাকার মো: ওসমান আলীর ছেলে মো: সবুজ (২০)। এবং এই মামলার অন্য আসামীরা হলেন, হিরেন চন্দ্র শীল (২৬), ফরিদ হোসেন (২২) ও সেলিম (২২)।
বুধবার (১৯ আগষ্ট) ভোর রাতে উপজেলার সেনুয়া ও পীরগঞ্জ থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে দুই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে পীরগঞ্জ থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ধর্ষিত কিশোরীর বাবা মো: আবু সুলতান।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহে এক সুতার ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করার সুবাদে ভোলাপাড়া, রাণীশংকৈলের বাসিন্দা কনক (১৭)’র (ছন্দনাম) সাথে পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার নয়নের পরিচয় হয়।
এদিকে গত জানুয়ারী মাসে কনক চাকুরী ছেড়ে দিয়ে তার নিজ বাসায় অবস্থান করে। পুর্ব পরিচয়ের সুবাদে নয়ন ভালো জায়গায় কনককে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় তাদের বাসায় যাতায়াত করে ও মোবাইলে যোগাযোগ রাখে।
ঘটনার দিন গত সোমবার (১৭ আগষ্ট) বিকেলে নয়ন মুঠোফোনে কনককে পীরগঞ্জে আসতে বলে। নয়নের ফোন পেয়ে কনক তার প্রতিবেশি এক মেয়ে কণাকে (১৪) (ছদ্মনাম) সাথে পীরগঞ্জে আসলে চৌরাস্তায় নয়ন ও তার চার-বন্ধু সবুজ, হিরেন চন্দ্র শীল, ফরিদ হোসেন ও সেলিম তাদের সাথে মিলিত হয়।
পরে কথাবার্তা সেরে কনক মুঠোফোনের ব্যাটারী কিনতে চাইলে নয়ন তাকে বলে সেনুয়া বাজারে তার পরিচিত দোকান রয়েছে সেখান থেকে কম দামে ব্যাটারী কিনতে পারবে বলে নয়নসহ তারা সেনুয়া যায়।
সেখান থেকে পীরগঞ্জে ফিরলে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এদিকে নয়ন তাদের ইজিবাইকে করে নিজের বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে জুস ও চিপস খেতে দেয়। এসব খাওয়ার পর কনক ও কণার মধ্যে ঘুম ঘুম ভাব হলে তাদের সবুজের বাসায় নিয়ে একদফা ধর্ষণ করা হয়।
এরপর আবার সেখান থেকে তাদের নিয়ে ভোমরাদহ এলাকার একটি আখ ক্ষেতে নিয়ে রাতভর তাদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় নয়ন ও তার বন্ধুরা। নির্যাতন শেষে ভোর রাতে ভোমরাদহ স্টেশনের কাছে রেললাইনের পাশে তাদের ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
পরে মুমুর্ষ অবস্থায় কনক ও কণা কোনরকম একটি ইজিবাইক ভাড়া করে নিজ বাসায় ফিরে অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে কনককের বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে পীরগঞ্জ থানায় মঙ্গলবার (১৮ আগষ্ট) একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে পীরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার আইও খায়রুল আনাম ডন জানান,উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাতেই ২ আসামীকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।