ছিন্ন মূল বা বসতভিটা হীন মানুষের কথা বলতে চাচ্ছি। উন্নত দেশের ছিন্নমূল বা বসতভিটা হীন (Homeless) মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা গুটিকয়েক। যাদের জন্য সরকার বা রাষ্ট্র মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ ও বিভিন্ন মুখী কর্মসূচি খুবই সতর্কতার সহিত পালন করে থাকে। কিন্তু দরিদ্র দেশের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সীমাহীন দুর্ভোগ, দুঃখ, দুর্দশা ও কষ্টের বর্ণনা দেবার ভাষা জানা নেই।
সেক্ষেত্রে আমি বলব বৈষম্যের চেয়ে বৈশিষ্ট্যই ফুটে উঠে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে ভিক্ষা দেবার লোকের তুলনায় ভিক্ষা বৃত্তির লোকের সংখ্যা বেশি হলে এক কথায় সকলেই ভিক্ষুক বললে অতুক্তি হবে না।
ছিন্নমূল বা গৃহহীন মানুষ যেন আদি যুগের যাযাবর জীবন যাপনের প্রতিচ্ছবি। ইতিহাস তাই বলে কখনো অতিত ভুলতে নেই।কারণ অতীত যা ইতিহাস কখনো ক্ষমা করে না।
এখন বলা যাক মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দেশ রাষ্ট্রের কথা, যাকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ বা উন্নত দেশ বলে জানি। যেখানের চিত্র তুলে ধরতে গেলে বাংলাদেশর কথা বলতে পারি। ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা কম নয়। শহরে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে ছিন্নমূল মানুষকে আমরা ভাসমান জনগোষ্ঠী বলে থাকি। ঢাকা শহরের চিত্র তুলে ধরলে এ সংখ্যা কম হবে না।
শুধু মাত্র দুইটা স্টেশনের কথা সকলে অবগত এক- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন- যেখানে এ শ্রেণির বিভিন্ন বয়সের বিরাট একটা জনগোষ্ঠী বংশপরম্পরায় জীবনযাপন করছে দীর্ঘদিন ধরে। কোনোভাবেই সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা এদের পুনঃ বাসন করতে সক্ষম হয়নি। যেখানে প্রতিনিয়ত সামাজিক অবক্ষয়ের হাজারো কার্যসিদ্ধ হচ্ছে অন্যদিকে হরেক রকম অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। দুই- ঢাকা সদরঘাটের কথা বলতে পারি ছিন্নমূল বা ভাসমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। সারা সদর ঘাটের পন্টুন, জলে ও স্হলে একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
বাস্তব চিত্র ও ফলাফল সেই একই রকম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মতো।
ছিন্নমূল বা ভাসমান আর এক শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা নদী ভাঙ্গনের কারণে। জীবন জীবিকার উদ্দেশ্য ছুটে চলে শহরমুখী হয়ে। ফলাফল সেই সদরঘাট বা রেলওয়ে স্টেশনের মতোই কারণ এদের একাংশ নতুন ভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে বা অবস্থান করে ৷ আর এক শ্রেণীর জনগোষ্ঠী একটু উন্নত জীবনযাপন করে যারা বিভিন্ন পরিত্যক্ত সরকারি বা বেসরকারি মালিকানাধীন জমিতে বস্তি ঘর তুলে বসবাস করে। এদেরকে ছিন্নমূল বা ভাসমান বলা যায় না বস্তিবাসী বললে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যাবে।
আরও এক শ্রেণীর মানুষ অতিপরিচিত আদি ঐতিহ্য বহণ করে যাদের বেঁদে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে নৌকায় করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নদীপথে স্থানান্তরিত হয়ে জীবন জীবিকার জন্য ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ, সাপের খেলা দেখিয়ে স্থায়ী বসতিদের কাছ থেকে কিংবা হাট বাজারে অর্থ উপার্জন করে। যাযাবরের জীবন হারিয়ে যাওয়ায় কোন উপায় নেই।
তুলনামূলক ভাবে শহরের তুলনায় গ্রামে এমন ছিন্নমূল বা ভাসমান লোকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। দু’এক পরিবার প্রাকৃতিক কারণে গৃহহীন হলে স্বচ্ছল ও সাবলীল গৃহস্থদের বাড়িতে বসত ঘর তুলে আশ্রিত থাকে এবং বিনিময়ে ঘরে বাইরে এই শ্রেণীর
লোকজন গৃহস্থ কাজ করে ঋন মুক্ত হবার চেষ্টা করে।
আসলে পৃথিবীতে আমরা সবাই ছিন্নমূল, ভাসমান, যাযাবর, অতিথি বা মেহমান যেমক ক্ষনিকের জন্য এক স্থান বেড়াতে আসে আবার চলে যায়। আমরা সবাই তো একই শ্রেণী ভুক্ত তাহলে বৈষম্য কেন মানুষকে- মানুষ মনে করে স্বামর্থ অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। জীবন জীবনের জন্য স্লোগানটি পালন করি। আজকের বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন, এখানে ইতি টানলাম।
আরও পড়ুন বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন পর্ব -১
আরও পড়ুন খাঁটি সোনার বাংলার – খাঁটি সোনার মানুষ পর্ব ২
এই লেখক এর সকল লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজ ভিজিট করুন লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন
আমাদের Facebook page
রামিম রাফি, মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড। যোগাযোগ এডিটর, +8802478835086, ফোনঃ বার্তা প্রধান +8801713932564, সিইও আমির হোসেন। +8801746371260, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ লোকমান মৃধা। 01717966305, Emil: sadhinbanglatv52@gmail.com






