সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ছোট গাবুয়া গ্রামের মোস্তাক মিয়া (৩৫) এর পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
অন্যের বাসায় আশ্রিত থেকে চলছে তাদের বসবাস। জানা যায়, গোলখালী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের আলী আকব্বরের ছেলে মোস্তাক মিয়া। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। মোস্তাক মিয়া মানুষের সাথে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
মাঝে মাঝে কাজ না পেলে খেয়া নৌকায় মানুষ পারাপার করে কোন রকমে সংসার চালান। মোস্তাক মিয়া জানান, আমার জন্মের পরেই দরিদ্র পরিবারে হাতাশা লেগে রয়েছে। বাবা গরিব হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারি নাই।
বাবা অসুস্থ থাকায় আমাকে ধরতে হয় সংসারের হাল। আমার নেই কোন জায়গা জমি, নেই কোন ঘর, মানুষের জমিতে শ্রম দিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালাচ্ছি। যে দিন কাজ থাকে না সেদিন খেয়া নৌকা চালাই। তিনি আরও বলেন, শুনেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গরীবদের নাকি ঘর দেয়।
যদি আমি একটি ঘর পেতাম তাহলে বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে পারতাম। অন্য মানুষের বাড়িতে আর কতদিন থাকব। মোস্তাক মিয়ার স্ত্রী সিমা বেগম (৩০) জানান, আমার স্বামীর রোজগারে আমাদের ৪টি জীবন চলে। থাকি অন্য মানুষের বাসায়, খুব কষ্টে।
মোস্তাক মিয়ার মা পিয়ারা বেগম (৬০) জানান, আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পরলে আমার ছেলে মোস্তাক সংসারের হাল ধরেছে। ছেলেটা খুব কষ্ট করে। অন্য মানুষের বাড়িতে থাকি বলে প্রায় সময়ই তাদের কথা শুনতে হয়। তাদের বা দোষ কী? তাদের বাড়িতে আর কতদিন আমাদের রাখবেন।
সবারই তো জায়গা জমি দরকার। আমার ছেলেটাকে যদি সরকারীভাবে একটি ঘর দিত তাহলে আমরা সরকারের কাছে চির ঋণী থাকতাম। এ বিষয়ে গোলখালী একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রাশিদা বেগম বলেন, আসলেই মোস্তাক মিয়ার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরকারীভাবে তাদেরকে একটি ঘর দিলে পরিবারটির অনেক উপকার হত। গোলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেক মাস্টার বলেন, মোস্তাক মিয়ার কোন জমা-জমি নেই। আসলেই সরকারীভাবে ঘরের দাবিদার তারা।
গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসিরউদ্দিন হাওলাদার বলেন, মোস্তাক মিয়ার পরিবার আসলেই অসহায়। অন্য মানুষের সাথে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সরকারীভাবে মোস্তাকের পরিবার একটি ঘর পেলে তারা সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।