পটুয়াখালীর গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়নের লঞ্চঘাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ নদীবেষ্টিত উপকূলীয় উপজেলা গলাচিপা। রাবনাবাদ, তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গসহ বেশ কয়েকটি নদী ঘিরে রেখেছে এ উপজেলাটি।
নদীগুলোর ভাঙনে ঝুঁকিতে পড়ছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বেড়িবাঁধের বিভিন্ন জায়গা। বিগত বন্যাগুলোর আঘাতে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে গলাচিপা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
পটুয়াখালী পাউবো ও এলজিইডি অফিসসূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৬-১৯৭৭ অর্থবছরে গলাচিপায় ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে পাউবো। ৫৫/১ পোল্ডারের বাঁধটি গলাচিপা পৌর এলাকা থেকে শুরু হয়েছে, যা গলাচিপা সদর ইউনিয়ন, পানপট্টি, রতনদী-তালতলী,চিকনিকান্দি ও ডাকুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত গেছে।
১৯৯৫-১৯৯৬ অর্থবছরে ওই বেড়িবাঁধের ওপর সড়ক নির্মাণ করে এলজিইডি। গলাচিপা থেকে বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার অংশে কার্পেটিং করা হয়। এ সড়কটি উপজেলা সদরের সাথে ডাকুয়া, কলাগাছিয়া, চিকনিকান্দি, গজালিয়া ও বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ সহজ করে দেয়। এ ছাড়াও সড়কটি দিয়ে পটুয়াখালী জেলা সদর, দশমিনা ও বাউফল উপজেলায় সহজে যাতায়াত করা হয়।
ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালী বাজারসংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ১০০ মিটার খুবই ঝুঁঁকিপূর্ণ, ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমানে বাঁধসংলগ্ন ডাকুয়া ইউপি ভবন, আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেঁতুলতলা বাজারের শত দোকান, প্রাচীন একটি জমিদার বাড়ি, সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদের কবরস্থানটিসহ হাজারখানেক ঘরবাড়ি হুমকির মুখে। সড়কটি নদীতে ধসে গেলে পাঁচ ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে।
স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।
এলজিইডির গলাচিপা উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সম্প্রতি নির্বাহী প্রকৌশলী ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা ডাকুয়ার সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। শুরুতে বাঁধ মেরামত, পরে কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। রাবনাবাদের জোয়ারে তেঁতুলতলায় বাঁধের ১০০ মিটার ভাঙনের কবলে পড়েছে জানিয়ে পটুয়াখালী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, ভাঙনরোধে প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার জিওব্যাগ ফেলে নদী সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়েছে।
এতে এক কোটি ৭২ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১২ হাজার ব্যাগ ফেলা হয়েছে।